কী পেলো জীবন ও রাষ্ট্র থেকে?
কী দিলো সাহিত্যে ও কি পেল সাহিত্য থেকে?
জীবন ও সাহিত্য
পরিশুদ্ধ দুঃখ ও নিথর দেহ
প্রেম ও দ্রোহ
আক্ষেপ ও অসম মায়ার দাবি,
সব নেওয়ার পরও সব দেওয়ার পর
থাকে বাকী শুধুই নিথর দেহ।
যে জ্বলে আগুন জ্বলে
বেদনা তোমাকে বলেছি কেঁদো না
কবিতা একাত্তর এবং ক্ষণে ক্ষণে দ্রোহ
অসময় প্রেমের দাবি
বিদ্রোহ ঘোষণা তারুণ্যে স্লোগান
মায়া বিহীন কাটানো সময়
রাষ্ট্রের নিষ্ঠুরতা, বঞ্চিত ও প্রতারণা
একুশে পদক ও স্বাধীনতার মালা
কি হতে দিলে– রাষ্ট্রের পদক রাষ্ট্রের জন্য।
স্মৃতির উস্কানি, পীড়িত খাঁখাঁ গা,
কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে
আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা।
আবার লিখবে কে– নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়?
চুমো, নিউটন বো*মা, সম্রাজ্ঞী করার বাসনা-
মিথ্যে সব, ছলনাময়ী এক মানবীর কষ্ট।
তুমি কি জুলেখা, শিরী, সাবিত্রী, নাকি রজকিনী?
নাকি অনির্ণীত তুমি?
কে কাকে গেলাম ছেড়ে– আমি না হেলেন?
কৃষক, বৈজ্ঞানিক চাষাবাদ ও ফসল
সংসার সংসার করে হৃদয়ে হয়েছে কত প্রার্থনা
বেশ জায়গা করে দিলাম ফসলও দিলাম
কিন্তু নিজের আঙিনায় হল না জায়গা
তোমাদের নামেই উইল করা এই নিথর দেহের!
শব্দের মেলা, সংগীতের লীলা
স্বাধীনতা দিলাম তবু্ও মন ভরলো না
এবার মাথা খাও,কলঙ্ক দেও ।
জীবিত দিয়েছো নিথর দেহের পাশে কতটা দিবে?
সব দিলাম, সব নিল কিন্তু
নিল না আমার নিথর দেহ খানি।
কে লিখিছে কোন ইতিহাসে
হেলাল হাফিজও ছিল মুক্তিযোদ্ধা
হেলাল হাফিজও সেই সময় ছিল
সাত কোটি স্বাধীনতার একপাতা।
পতন দিয়েই ঠেকাতে পারলেন কি পতন?
দেখেনি কেউ হৃদয় খোলে
দেখবে না কেউ নিথর দেহ খোলে।
আজ আর কে পড়বে সাদা কাপড় নিথর দেহ ছাড়া?
কেউ থাকে খুব গোপনে
কারো কারো আবার রাজপথই প্রেম
অথবা জীবনের হেলেন
অথবা কারো কারো রাজপথই জীবন-সংসার।
কেউ কেউ ভুলে যায় হেলেন ও সাবিত্রীদের
উত্তাল রাজপথের স্লোগানে স্লোগানে।
পিছনে কেউ থাকে
সামনেও কেউ থাকে
সাথেও হয়তো কেউ থাকতে পারে প্রয়োজনে কিন্তু
নিরূপায় খুব একলা গোপনের জীবনে
শেষেও এবং নিথর দেহেও।
কিছু সময়ের জন্য হলেও
কেঁদে কেউ ভাসাবে না বুক,
আর পায়চারি নয়-গোপন আকুতিও নয়
কষ্টের ফেরীআলা, খুব মায়া লাগে
পড়ে আছে নিথর শূন্য দেহে।
খুব ভীষণ মায়া লাগে
পড়ে আছে নিথর শূন্য দেহে
কী পেলো হেলাল হাফিজ
জীবন, রাষ্ট্র ও সাহিত্য থেকে?
একটা জীবন খরচ করে গেল নিজের মত করে।
সুযোগ ছিল দেওয়া হয়নি
কেউ যদি বোঝা মনে করে
মনে রেখো আক্ষেপ হবে পরিবার থেকে রাষ্ট্রের
হয়নি, কেন হল না তার, মুখোমুখি এই প্রশ্নের ?
একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতটা কাঙাল,
কতো হুলুস্থুল অনটন আজন্ম ভেতরে আমার।
যা হবার তাই হল, জননীও নাই
নিথর দেহের পাশে মানবীও নাই।
সংগ্রহ: কবির সৌজন্যে।