১.
যে প্রাণ দিলাম তোমায় সে তো তোমারই দেয়া
আসল কথা এই—তোমাকে কিছুই দেয়া হলো না
২.
বসন্ত মেঘের বর্ষণ শেষে উন্মুক্ত আকাশ আমার কাছে
যেন বিরহ বেদনার অশ্রুতে নিজেই ভেসে যাওয়া
৩.
তোমার দরজার সামনেই ঘর বানিয়ে নিয়েছি আমি
এবারও কি বলবে আমার ঘরের ঠিকানা জানো না তুমি!
৪.
কেন বেঁচে আছো গালিব—এই প্রশ্ন অবুঝের
আমার ভাগ্যে লেখা মৃত্যুর বাসনা নিয়ে আরো কিছু দিন বেঁচে থাকা
৫.
তোমার জন্য বসন্তের এত আয়োজন
ফুলের সুগন্ধি নিঃশ্বাসও আমারও প্রতিদ্বন্ধী হয়েছে
৬.
কোন এক বসন্তের কেরে ছলাকলায় মারা পড়েছি তাই
আর কিছু নেই, শুধু ফুলেরা ঢেকে রেখেছে সমাধি আমার
৭.
তার আয়ত চক্ষু নিশানা করে আছে আমার হৃদয়ের দিকে
তার কেশের প্রতিটি তন্ত্রী মনে হচ্ছে যেন সুরমামাখা চোখ
৮.
হৃদয় অগ্নিমন্দির না হলে এই বুক লজ্জা পায়
নিশ্বাসের আগুন না ঝরলে লজ্জিত হয় হৃদয়
৯.
গালিব, মদ খাওয়া ছেড়েছি, তবে এখনো মাঝেমধ্যে
পান করি মেঘলা দিনে আর পূর্ণিমা রাতে
১০.
সে আমার ঘরে এসেছে, খোদার একি অলৌকিক কৃপা!
কখনো তাকাই তার দিকে, কখনো তাকাই এই ঘরের দিকে
মির্জা গালিব ছিলেন উর্দু ও ফারসি ভাষার অন্যতম জনপ্রিয় কবি। তিনি ২৭ ডিসেম্বর ১৭৯৭ সালে ভারতের আগ্রায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৯ সালে দিল্লিতে মৃত্যুবরণ করেন। তার পুরো নাম মির্জা বেগ আসাদুল্লাহ খান। তবে সংক্ষিপ্তভাবে আসাদ বা গালিব নামে পরিচিত। তিনি মূলত গজল রচনায় বিখ্যাত। তাঁর কবিতায় প্রেম, জীবন, মৃত্যু, নিয়তি ও আত্ম-অনুসন্ধানের নানা দিক ফুটে উঠেছে। গালিবের ভাষা ছিল প্রাঞ্জল, রূপক ও চিন্তনময়, যা পাঠককে গভীরভাবে আলোড়িত করে।